উষ্ণতার খোঁজে

উষ্ণতার_খোঁজে
মোঃ মনিরুল ইসলাম
এই শীতে বাইরে বের হবার কোনো ইচ্ছে ছিল না। নীহারিকার জন্য ইচ্ছে হল। শালমুড়ি দিয়ে কুয়াশা ভেদ করে চলেছি। রাস্তায় কেউ নেই। একটা কুকুর কিছুটা পথ পিছুপিছু এসে বামদিকের গলিতে ঢুকে গেল। তাছাড়া আর কোনো প্রাণী দেখতে পাচ্ছি না।
আজ কৃষ্ণপক্ষের শেষ তিথি। কাজেই রাতের অন্ধকাররূপ আজ সীমানা পেরিয়েছে। নীহারিকা পথ হারায় নি তো! ভাবতে ভাবতেই শুকনো পাতার মর্মরধ্বনি কানে এল। পৌষের শুরু থেকেই গাছের পাতা লালচে হয়। কদিন বাদে শুকিয়ে ঝরে যায়। আমার পাশে যে পাতাহীন জারুল গাছটা আছে সেটাকে দিনের বেলা নগ্ন দেখায়।
মোবাইলের ফ্লাশলাইট জ্বালালাম। সমস্ত শরীরে কুয়াশা মেখে এক মানবী এগিয়ে এল। নীহারিকা এল। ঘনকুয়াশার সাথে ধুমায়িত নিঃশ্বাস মিশে তার চেহারায় অদ্ভুত ধোঁয়াশা তৈরি করেছে।
দুজনে মুখোমুখি দাড়িয়ে আছি। নীহারিকা বললো, "গাঁদাফুলের গন্ধ আসছে কোথা থেকে?"
আমি বললাম, "আমি এনেছি।" বুকপকেট থেকে গাঁদাটা হাতে নিলাম। নীহারিকার খোঁপায় ফুলটা রাখতে গিয়ে তার লজ্জামাখা নিষ্পাপ হাসিটা অন্ধকারে দেখতে পেলাম না।
সহসা দমকা হাওয়া শরীরটা কাঁপিয়ে দিল। লোমগুলো কাঁটা দিয়ে উঠলো। উষ্ণতার অভাবে ঠোঁটদুটো কাঁপছে। আচ্ছা, নীহারিকার কি ঠাণ্ডা লাগছে? জানি না। জিজ্ঞেস করবো নাকি ছুঁয়ে দেখবো?
রাতের সাথে পাল্লা দিয়ে শীত বাড়ছে। উষ্ণতার লোভে বাতাসের অণুগুলো আরো কাছাকাছি আসছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post